একজন ব্যর্থ Freelancer এর গল্পঃ
মানিক মিয়া দশম শ্রেণিতে পড়েন। তার বাবা একজন সরকারী চাকুরীজীবী, রিটার্ড করার পড় যেই টাকাগুলি পেয়েছেন সবগুলি টাকায় ব্যায় করেছেন বিল্ডিং তৈরি করাতে, এখন আয়ের উৎস পেনশনের টাকা মাত্র। হঠাৎ করেই একদিন তিনি মারা যান। হঠাৎ করেই পরিবারে নেমে আছে কালো মেঘের ছায়া।
কি করবে এখন মানিক? একদিকে পড়ালেখার চাপ অন্যে দিকে পরিবারের হাল তাকেই ধরতে হবে পেনশনের টাকাটা এখন তার মা ই পাই অল্প কিছু টাকা কোন ভাবে সংসার চলছে। আসলে এতদিন বাবা কিভাবে সংসার চালিয়েছে মানিক মিয়া হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে সেইটা।
এইভাবে চলবে না তাকে নিজের ই কিছু করতে হবে, যেই ভাবা সেই কাজ পড়াশুনারও ইতি ঘটালেন দশম শ্রেণিতেই। বন্ধুদের কাছে আত্মীয় স্বজনদের কাছে দৌড়াতে লাগলেই চাকরীর জন্য। কিন্তু বেশিদূর পড়াশুনা করেনি কেই বা চাকুরী দিবে? আর এই বাজারে চাকুরী কি এতই সহজ। তারপর ও ছোট খাট চাকুরী কেউ দিলে মানসম্মানের জন্য সেইটা করলেন না। ভয় পেতেন মানুষে কি বলবে!
মানিক মিয়া দিন দিন হতাসার মধ্যে ডুবে যাচ্ছেন। হঠাৎ একদিন তার চোখ গেল দেয়ালের একটি পোস্টারে ”ঘরে বসেই লাখ টাকা ইনকাম করুন Freelancing এর মাধ্যেমে” দেখার সাথে সাথেই চলে গেলেন সেই ঠিকানাতে এবং সব কিছু বিস্তারিত জানায় বাসায় এসে,
Freelancing নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করেই তিনি বুঝলেন আসলেই কোর্স করেই তিনিও লাখপতি হয়ে যাবেন এবং এই সেক্টর থেকে অনেক ভাল কিছু করতে পারবেন (বেশকিছু ট্রেনিং সেন্টারের সফল ছাত্রদের ভিডিও দেখলেন এবং নিজের উপর ১০০% বিশ্বাস আনলেন যে তিনি পারবেন) ।
সাথে সাথে আর কোন চিন্তাভাবনা না করেই তার আম্মুকে বলে আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে ধার দেনা করে একটি ভাল কনফিগ এর কম্পিউটার তৈরি করলেন কারণ তিনি ট্রেনিং সেন্টার থেকেই শুনেছেন ভাল কনফিগ এর কম্পিউটার দরকার। প্রথমে গ্রাফিক ডিজাইন দিয়েই শুরু করলেন। কোর্স শেষ হতে না হতেই আত্মীয় স্বজনদের থেকে চাপ আশা শুরু করলো পাওনা টাকার জন্য এইদিকে মানিকের মা কথা শুনেই যাচ্ছে, আর মানিক দিনের পর দিন আরো হতাসার মধ্যে চলে যাচ্ছে।
কারণ সে যতটা সহজ ভেবেছিল আসলে ততটা সহজ ছিল না, কিছুদিন বিভিন্ন মার্কেটে ঘুরাঘুরি করেও কোন লাভ হয়নি মানিক মিয়ার। এই দিকে টাকার চাপ দিনের পর দিন বাড়তেই থাকে এবং মানিক মিয়ার দাড়া আর অপেক্ষা করা সম্ভব হয়না, Freelancing বাদ দিয়ে অত:পর ছোট্ট একটি চাকুরী খুজে পান তাও গেটের দারোয়ান হিসাবে। আর লজ্জা করেনি ছোট চাকুরী করতে কারণ পাওনাদারদের টাকা পরিশোধ করতে হবে।
গল্পটি সম্পূর্ন কাল্পনিক আসলে এই গল্প থেকে অনেক কিছু শিখার আছে আমাদের যেমন :-
১। জীবনে যেকোন সিদ্ধান্ত হুটহাট নেওয়া উচিত নয়। একটি কাজ করার আগে হাজারবার চিন্তা ভাবনা করে কাজটি করা উচিত। হাজার বার ভাবা উচিত কাজটি করতে ভাল,খারাপ কি হতে পারে তারপর সেই কাজটি করা উচিত।
২। মাথায় প্রেসার নিয়ে কখনোই কোন কাজে নামবেন না যেইখানে ১০০% গ্যারান্টি নাই যে আপনার কাজটি ১০০% ঠিক হবে।
৩। জীবনে কোন কাজই ছোট নয়। ছোট কোন কাজে মান সম্মান যায়না, মানুষ কি বললো সেই দিকে কখনোই কান দিতে নেই।
৪। হাজারো বিপদে পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া।
এবং অনেকেই বলে ভাই চকুরী আর ভালো লাগেনা ভাবছি চাকুরী ছেড়ে দিয়ে Freelancing করবো বাসায় বসে ইনকাম করা যাবে। এমন পদক্ষেপ কখনোই নেওয়া উচিত নয়। সঠিক সিদ্ধান্ত এইটাই চাকুরীর পাশাপাশি আপনি Freelancing করেন যখন আপনি মনে করবেন এখন আমার প্রতি মাসে ৫০হাজার টাকা ইনকাম হচ্ছে তখন আপনি চাইলে চাকুরী ছেড়ে ফুল টাইম Freelancing এর সময় দিতে পারেন।
একটা কথা মনে রাখবেন একটি ভুল সিদ্ধান্ত আপনার জীবন ধংস করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ঠ